বইয়ের কর্নার: ঘরেই বানিয়ে নিন আপনার পাঠশালা
যারা বই ভালোবাসেন, তাদের কাছে বইয়ের দোকান বা লাইব্রেরি যেন এক টুকরো স্বর্গ। তবে ভাবুন তো, যদি নিজের ঘরেই তৈরি করা যায় এমন এক ছোট্ট, আরামদায়ক বই পড়ার কোণা? চলুন জেনে নেওয়া যাক কীভাবে সহজেই গড়ে তুলতে পারেন নিজের ব্যক্তিগত পাঠশালা।
পর্যাপ্ত আলো ও বাতাসের সুব্যবস্থা
বই পড়ার জন্য কর্নারে অবশ্যই থাকতে হবে পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক আলো ও বাতাসের চলাচল। কম আলোয় বই পড়লে চোখের উপর চাপ পড়ে, চোখ ব্যথা বা পানির সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে যারা চশমা ব্যবহার করেন, তাদের জন্য আরও বেশি সতর্ক থাকা জরুরি।
তাই কর্নারে জানালার মাধ্যমে প্রাকৃতিক আলো প্রবেশের ব্যবস্থা করুন এবং রাতে পড়ার জন্য অবশ্যই একটি ভালো মানের বৈদ্যুতিক বাতি রাখুন। পাশাপাশি হাওয়ার চলাচলের সুবিধা থাকলে পড়ার সময় আরও আরামদায়ক হবে।
বইয়ের জন্য শেলফ
পাঠকোণ সাজানোর সময় একটি শেলফ যোগ করতে পারেন, যা জায়গাটিকে দিবে পরিপাটি ও গোছানো একটি রূপ। জায়গা কম থাকলে ওপেন শেলফ বা ছোট টেবিল ব্যবহার করাই ভালো। এতে বই সহজেই সাজিয়ে রাখা যাবে এবং ঘরের সৌন্দর্যও অক্ষুণ্ণ থাকবে।
আরামদায়ক বসার আয়োজন
শুধু পড়ার জায়গা বানালেই চলবে না, সেখানে আরামদায়ক বসার ব্যবস্থাও থাকতে হবে। চাইলে রাখতে পারেন ইজিচেয়ার, ছোট সোফা বা আরামদায়ক একটি ডিভান। আর যদি বাড়িতে বাড়তি কোনো ঘর থাকে, তাহলে সেটিকে পুরোপুরি বইয়ের ঘর বানিয়ে ফেলতে পারেন। বড় ঘর হলে বড় সাইজের বুকশেলফ বা আরামদায়ক বড় সোফাও অনায়াসে রাখা সম্ভব।
শিশুর জন্য বিশেষ পাঠকোণ
ছোটদের পড়ার প্রতি আগ্রহ বাড়াতে তাদের জন্য রঙিন ও আকর্ষণীয় একটি কর্নার তৈরি করতে পারেন। সেখানে চেয়ার-টেবিল, আরামদায়ক বসার চেয়ারের পাশাপাশি রঙিন ছবি, দোলনা এবং সহজে বই হাতে পাওয়ার মতো উচ্চতার শেলফ রাখতে পারেন। এতে শিশুরা নিজেরাই বই পড়ায় উৎসাহিত হবে।
বইয়ের রক্ষণাবেক্ষণ
বইয়ের কর্নারে নিয়মিত আলো-বাতাসের প্রবাহ বজায় রাখুন। না হলে বইয়ে ছত্রাক জমা, পাতার হলুদ হয়ে যাওয়া বা স্যাঁতসেঁতে গন্ধের মতো সমস্যা হতে পারে। তাই সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করাই হবে মূল চাবিকাঠি।
দিনের ক্লান্তির শেষে নিজের সাজানো ছোট্ট বইয়ের কোণ হতে পারে প্রশান্তির এক আশ্রয়। আর বিকেলের এক কাপ চায়ের সাথে যদি প্রিয় বইয়ের পাতা ওল্টানো যায়, তাহলে সেই শান্তির অনুভূতির তুলনা মেলা ভার।